কুষ্টিয়ার বটতৈল বাইপাসের আদিয়ান হোটেলে খেতে না আসায় চুয়াডাঙ্গার একটি ছয় চাকার ট্রাক ড্রাইভারকে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করেছেন হোটেল মালিক মুক্তার। শুক্রবার (১০নভেম্বর) সকাল আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে বটতৈল মোড় সংলগ্ন আলামিন হোটেলের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। মারাত্মক জখমের শিকার ড্রাইভার আলামিন (২৫) চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর থানার মনোহরপুর গ্রামের আবু বক্করের ছেলে। উপস্থিত স্থানীয় জনতা ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, যাত্রাপথে চুয়াডাঙ্গাগামী ছয় চাকার ট্রাকের ড্রাইভার আলামিন সকালের খাবার খাওয়ার উদ্দেশ্যে কুষ্টিয়া বটতৈল বাইপাসের আলামিন হোটেলের উল্টা পাশের পার্কিংয়ে ট্রাকটি পার্কিং করেন। হঠাৎ পেছন দিক থেকে আদিয়ান হোটেলের মালিক মুক্তার ট্রাকটি ব্যারিকেড দেয় এবং বের করতে দেবে না বলে জানায়। তখন ট্রাকের ড্রাইভার আলামিন আদিয়ান হোটেলের মালিক মুক্তারকে প্রশ্ন করেন কেন বের হতে দেবেন না? উত্তরে মুক্তার বলেন- “তুই আমার হোটেলের উল্টাপাশে গাড়ি রেখেছিস, তোকে আমার হোটেলেই খেতে হবে। না হলে আমি তোকে গাড়ি এখান থেকে নিয়ে যেতে দেব না।” তখন ড্রাইভার আলামিন বলেন- “এটা সরকারি জায়গা, আমি সরকারি জায়গায় গাড়ি রেখেছি আপনি আটকানোর কে? মুক্তারকে বললে মুক্তার তার সাথে দুর্ব্যবহার করা শুরু করে। একপর্যায়ে মুক্তার ও আদিয়ান হোটেলের বেশ কয়েকজন কর্মচারী ড্রাইভার আলামিনকে ধরে বেধড়ক মারপিট করে। উপস্থিত লোকজন আলামিনকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করে পাশের আল- আমিন হোটেলে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আল আমিন হোটেলে ভাত খেতে বসলে পুনরায় মুক্তার ও তার সহযোগীরা আলামিনকে গলা ধরে হোটেল থেকে বের করে আনে এবং কাঠের মোটা লাঠি দিয়ে মাথায় সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে স্বজোরে আঘাত করে। এতে ড্রাইভার আলামিনের মাথা ফেটে যায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত প্রাপ্ত হয়। উপস্থিত ড্রাইভাররা তাকে উদ্ধার করে পাশের একটি ফার্মেসীতে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। সেসময় ড্রাইভার আলামিনের মাথার ক্ষত বেশি হওয়ায় এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণে ফার্মেসী থেকে তার মাথায় দুইটি সেলাই দেওয়া হয়। এদিকে ড্রাইভার আলামিনকে মেরে মারাত্মক জখম করার প্রতিবাদে উপস্থিত ড্রাইভাররা ঘণ্টাব্যাপী খুলনা- কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে চৌড়হাস হাইওয়ে পুলিশ ও কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের দুইটি টিম উপস্থিত হয়ে ড্রাইভারদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। বিষয়টি নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ টিমের প্রধান এস আই হাসানের মুঠোফোনে সন্ধ্যা নাগাদ বেশ কয়েকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। উল্লেখ্য যে, কুষ্টিয়া বটতৈল বাইপাস মোড়ে অবস্থিত আদিয়ান হোটেলের মালিকের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও বেশ কয়েকবার ড্রাইভার ও হোটেলের কর্মচারীদের মেরে মারাত্মক জখম করার অভিযোগ রয়েছে।