রাজধানীর শেরে-ই বাংলা নগর শ্যামলী শিশু হাসপাতালের উপপরিচালক আরো বলেন, করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু জ্বরে বিপর্যস্ত জনজীবন। রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় এডিস মশার প্রকোপ বেড়েছে। হাসপাতালে শিশুরোগীর ভিড় বাড়ছেই। এ বছর শিশুদের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। বছরের শুরুর দিকে ডেঙ্গু জ্বরের প্রভাব কম থাকলেও জুন মাসে তা বাড়তে থাকে। আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহেই গেল মাসে শনাক্ত হওয়া মোট রোগীর অর্ধেকের বেশি শনাক্ত হয়েছে শিশু। এ বছর এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৭৫৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। ডা. প্রবীর কুমার সরকার বলেন, ডেঙ্গুরোগীদের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই, শিশুদের ডেঙ্গু থেকে রক্ষায় অভিভাবকদেরকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ শিশুরা সাধারণত তাদের শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন বা সতর্ক না হওয়ার কারণে তাদের ওপর এই রোগের প্রভাব বড়দের চাইতে বেশি। তিনি বলেন, এডিস মশার উৎস ধ্বংস করতে হবে। এডিস মশা সাধারণত গৃহস্থালির পরিষ্কার স্থির পানিতে জন্মে, যেমন ফুলের টব, গাড়ির টায়ার বা ডাবের খোলে বৃষ্টির জমা পানি ইত্যাদি। এডিস মশার লার্ভা জন্ম নিতে পারে এমন স্থানগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো নষ্ট করে ফেলতে হবে। বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। শিশুদের দিনে ও রাতে মশারির ভেতরে রাখতে হবে। বিশেষ করে নবজাতক শিশুকে সার্বক্ষণিক মশারির ভেতরে রাখা জরুরিসহ ফুলহাতা গেঞ্জি বা শার্ট এবং লং টাউজার পড়ানোর পরামর্শ দেন। এপর্যন্ত শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তিরোগী ১৬৫ জনের মধ্যে চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে ১১৯ জন, মারা গেছে ৪জন। সোমবার পর্যন্ত ভর্তি আছে ৪৬ জন। এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মাঠ পর্যায়ে এডিসের লার্ভা ধ্বংস করতে চিরুনি অভিযান এবং ওষুধ ছিটানোর কর্মসূচি নিয়ে প্রতিদিনই অভিযান চালাচ্ছে । ২৭ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত উত্তর সিটি করপোরেশন ৪২ লাখ ১৪ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করেছে। মিরপুর মাজার রোডের নির্মাধীণ একটি ভবনে প্রচুর লার্ভা পাওয়ায় সোমবার ভবন মালিককে জরিমানাও করেছে। জরিমানা থেকে বাঁচতে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখার আহ্বান জানান উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা আমাদের অভিযান চালিয়ে যাবো। একদিনও বসে থাকতে পারবো না। আমাদের চ্যালেঞ্জ আছে অনেক। এলাকাবাসী ও কাউন্সিলরদের আহ্বান জানাই নিজের আঙিনা নিজে পরিস্কার রাখেন। এর আগে গাবতলী বাস টার্মিনালে ত্রাণ বিতরণ করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।