সেতুর দরপত্রে দুর্নীতির অভিযোগসহ নানা অনিয়ম প্রমাণ হওয়ায় কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুল কাইয়ুম খানকে পদাবনতি দেওয়া হয়েছে।
তার ৩২ হাজার টাকার বেতন স্কেল কমিয়ে ১৬ হাজার টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া তাকে মিরপুর থেকে রাঙামাটির বরকল উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। পাশাপাশি মাদক গ্রহণের অভিযোগ থাকায় এক সপ্তাহের মধ্যে বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্টের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরপুর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস।
মাদক সেবনের বিষয়টি প্রমাণ হলে তাকে আরেকবার শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। তবে বদলির পর গত ২৮ অক্টোবর কাইয়ুমকে মিরপুর থেকে রিলিজ করা হলেও নতুন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়েই পালিয়ে গেছেন তিনি।
জেলা প্রশাসনের একটি দল কাইয়ুমের সময় বরাদ্দকৃত সরকারি টিআর, কাবিখাসহ বিভিন্ন প্রকল্পে বড় ধরনের অনিয়ম পায়। এ নিয়ে এর আগে তদন্ত দল তাকে গালমন্দ ও ভর্ৎসনা করে। পাশাপাশি নিয়মিত অফিস না করার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলা প্রশাসন থেকে বারবার তাগাদা দিলেও তিনি কর্ণপাত না করে স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যেতে থাকেন।
এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মিরপুর উপজেলায় গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পে ২৬টি সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। গত ২০ জুন এক দিনেই সব দরপত্র বিক্রি শেষ দেখানো হয়। পিআইও আব্দুল কাইয়ুমের যোগসাজশে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা সাধারণ ঠিকাদারদের বঞ্চিত করে নিজেরাই সব কাজ ভাগাভাগি করে নেন। এ নিয়ে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়। অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় তিন কার্যদিবসের মধ্যে চিঠির জবাব দিতে প্রকল্পের পিডি যুগ্ম সচিব আবু বকর সিদ্দিক পিআইওকে ২৩ জুন চিঠি দেন।
পরে অধিকতর তদন্ত করতে ৮ জুলাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত দল গঠন করা হয়। দলের প্রধান ছিলেন ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এম খালিদ মাহমুদ; সদস্য ছিলেন ত্রাণ ও দুর্যোগ অধিদপ্তরের পরিচালক (উপসচিব) মাহবুব আলম তালুকদার। ওই দিন রাতেই তারা কুষ্টিয়ার মিরপুরে আসেন তদন্তে। তারা সরেজমিন কাইয়ুমের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পান। তার মাদক গ্রহণের বিষয়টিও জানতে পারেন এ সময়।
কুষ্টিয়া জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, আব্দুল কাইয়ুমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাকে বদলি করা হয়েছে।
মিরপুরের ইউএনও লিংকন বিশ্বাস বলেন, নানা অনিয়ম পেয়ে আব্দুল কাইয়ুমকে বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া তাকে পদাবনতি দিয়ে মাদক সেবনের বিষয়টি পরীক্ষা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।