আজ বুধবার (৪ নভেম্বর) কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের জন্মদিন। ১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন । সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। এবছর গত ৬ জুলাই না ফেরার দেশে চলে যান বরেণ্য এই শিল্পী।
এন্ড্রুর বাবা ক্ষীতিশ চন্দ্র বাড়ৈ এবং মাতা মিনু বাড়ৈ রাজশাহী বুলনপুর মিশন গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। তার মায়ের কাছ থেকেই পড়াশোনার হাতেখড়ি। তার মা ছিলেন একজন সংগীত অনুরাগী, প্রিয় শিল্পী ছিলেন তার কিশোর কুমার। এই শিল্পীর নামানুসারেই সন্তানের নাম রাখেন কিশোর। মায়ের স্বপ্নপূরণ করতেই সংগীতাঙ্গনে পা রাখেন তার সন্তান এন্ড্রু কিশোর।
প্রাথমিকভাবে আব্দুল আজিজ বাচ্চুর অধীনে সংগীতে পাঠ গ্রহণ শুরু করেন এন্ড্রু কিশোর। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর নজরুল সংগীত, রবীন্দ্র সংগীত, আধুনিক, লোকসংগীত ও দেশাত্মবোধক গানের শিল্পী হিসেবে রাজশাহী বেতারে তালিকাভুক্ত হন।
এন্ড্রু কিশোর চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শুরু করে ১৯৭৭ সালে আলম খান সুরারোপিত ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রের ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে। তার রেকর্ডকৃত দ্বিতীয় গান বাদল রহমান পরিচালিত ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’ চলচ্চিত্রের ‘ধুম ধাড়াক্কা’। তবে এ জে মিন্টু পরিচালিত ১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘প্রতিজ্ঞা’ চলচ্চিত্রের ‘এক চোর যায় চলে’ গানটি গেয়ে শ্রোতাপ্রিয়তা লাভ করেন।
‘বড় ভালো লোক ছিল’ (১৯৮২) চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এন্ড্রু কিশোর। মহিউদ্দিন পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে সৈয়দ শামসুল হকের লেখা ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’ গানটিতে কণ্ঠ দেন তিনি। এ গানের জন্য শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। ১৯৮৪ সালে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের কথা ও সুরে ‘নয়নের আলো’ চলচ্চিত্রের তিনটি গানে কণ্ঠ দেন। গানগুলো হলো আমার সারা দেহ খেওগো মাটি’ ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন’ ও ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’। এমন অসংখ্য চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এই শিল্পী, যা এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’ ,‘বেদের মেয়ে জোছনা আমায় কথা দিয়েছে’, ‘আমার বুকের মধ্যখানে’, ‘তুমি আমার জীবন আমি তোমার জীবন’, ‘ভালো আছি ভালো থেকো’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘ডাক দিয়েছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেওগো মাটি’,‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’ প্রভৃতি।
জি/হিমেল