কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানা দিন মনোহারদি ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামের কুমার নদী দখলের মহা উৎসবে মেতেছে স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতা।এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় বলরামপুর গ্রামের মৃত জলিল বিশ্বাসের ছেলে আওয়ামীলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম, জালাল উদ্দিন, নজরুল ও মজিবর প্রায় ১০ দিন আগে থেকে এক্সকেভেটর দিয়ে নদী ভরাট করে পানি প্রবাহ বন্ধ করছে জায়গা দখলের উদ্দেশ্যে।
ইতিমধ্যে প্রায় ১০ বিঘা জায়গা এভাবেই দখল করে নিয়েছে এই প্রভাবশালী চক্রটি। তারা ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থাকার ফলে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। এলাকার কিছু প্রবীণ ব্যক্তি জানান, বলোরামপুর গ্রামের সরদারপাড়া এলাকার রাধা রঞ্জন ভৌমিক, বিপ্রধর ভৌমিক ও বুদ্ধেশ্বর ভৌমিক জমিদারের সেরেস্তা কাজ করতেন। তৎকালীন সেই সময় নদীর পাড়ের কিছু জায়গা তারা জলিল বিশ্বাসের নিকট বিক্রয় করে ভারতে পাড়ি দেন। কেনা জায়গা ফেলে রেখেই হঠাৎ করে এই চক্রটি নদীর ভেতর এক্সকেভেটর দিয়ে ভরাটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী আরো জানান, এরা যেন ক্ষমতার দাপটে ভূমিদস্যু বনে গেছেন। কুমার নদী বাঁচাতে এলাকাবাসী এই ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুললেও কোন ফল আসে নি। বাধার মুখে সাময়িক কিছু সময়ের জন্য কাজ বন্ধ থাকলেও আবারও তারা ক্ষমতার দাপটে প্রশাসনের প্রভাব দেখিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কুমার নদী এই চক্রটি দখলে নিয়ে স্থানীয় কাউকে গোসল কিংবা নদীর পানি ব্যবহার করতে দিচ্ছে না।
সিরাজুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি মনোহরদিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক। আমি ২৫ বছর ধরে এই জমি চাষ করছি। ১৯৯৪ সালে এই খানে ৫ বিঘা জমি ক্রয় করি। নদীর মধ্যে আমার ক্রয় করা জমি আমি সেই জমী এক্সকেভেটর দিয়ে সমান করে চাষ উপযোগী করছি। ইউএনও মহোদয় কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু আমি সব নেতাদের জমির কাগজ দেখিয়েছি তারা আমাকে কাজ করতে বলেছে তাই কাজ করছি। মনোহরদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার কানে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি স্থানীয় ক্যাম্প, থানা, ইউএনও ও আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্য মাহবুব-উল-আলম হানিফ ভাইকে বিষয়টি অবগত করি। এখন বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে। কোন প্রকার বেআইনী কাজ আমার ইউনিয়নে আমি থাকতে করতে দেব না।
ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান রতন জানান, সদর উপজেলা নির্বাহি অফিসার আমাকে ফোনে জানানো মাত্রই আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়ে এসেছি।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহি অফিসার জুবায়ের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি জানা মাত্র কুষ্টিয়া ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ কে বলে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। এর পরেও কাজ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।