দেশের প্রথম সারির পৌরসভার মধ্যে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী পৌরসভা একটি অন্যতম প্রাচীন পৌরসভা।
জনপ্রিয় এই পৌরসভার নির্বাচন ঘিরে প্রতিবারই রাজনীতির মাঠ থাকে জমজমাট।
এবারও আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে শুরু হয়েছে দেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণা।
পৌরসভার নির্বাচনে নৌকা পেতে মরিয়া আওয়ামী লীগের শীর্ষ তিন নেতা অপরদিকে ধানের শীষ প্রতীক পেতে মরিয়া বিএনপি দুই প্রার্থী।
নির্বাচনী প্রচারণা প্রকাশ্যে না থাকলেও কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী পৌর নির্বাচন ঘিরে শুরু হয়েছে ভিতরে- ভিতরে বেশ জমজমাট নিরব প্রচারণা।
করোনাজনিত পরিস্থিতিতেও এ নির্বাচন নিয়ে ঝড় উঠেছে চায়ের টেবিল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে রাজনীতির উচ্চ মঞ্চেও।
দীর্ঘদিন দেশের অন্যতম বৃহৎ শক্তিশালী দল বিএনপি কুমারখালী পৌরসভা জায়গা করতে না পারায় বেহাল অবস্থায় আছে।
হারানো চেয়ার ফিরে পেতে মরিয়া বিএনপির সম্ভাব্য দুই প্রার্থী।
অপরদিকে নিজেদের দখলে থাকা স্থান ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য তিন প্রার্থী।
সর্বশেষ তথ্য বলছে ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর কুমারখালী পৌর মেয়র পদে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সামছুজ্জামান অরুণ। এবারও নিজের অবস্থান ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা।
এছাড়াও পরিবার সূত্রে রয়েছে ব্যাপক শক্তিশালী ব্যাকগ্রাউন্ড। শক্তিমান রাজনীতিবিদ কিবরিয়া পরিবারের সন্তান হওয়াতে আলাদা শক্তি যোগাচ্ছে বলে ধারণা করছে সাধারণ জনগণ।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র সামসুজ্জামান অরুণ জানান, দল মনোনয়ন দিলে তিনি এবারও নির্বাচন করবেন। এমন চিন্তা থেকেই তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন-পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল রাজ্জাক খান।
আব্দুর রাজ্জাক খানের রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড বেশ শক্তিশালী। তিনি এর আগে ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর।
দীর্ঘদিন পরিচ্ছন্ন রাজনীতির সাথে থাকায় তিনি ও নৌকার মাঝির আশাবাদী বলে মনে করেন এই নেতা।
সাবেক কাউন্সিলর (সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি) তিনি বলেন, এবার পৌর নির্বাচনে আমি দলীয় মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করবো; দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে আমি থাকবো।
অপর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক ও পৌর আওয়ামীলীগের সদস্য জাকারিয়া খান (জেমস) ।
গত পৌর নির্বাচনে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন করে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন।
কুমারখালী জনকল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া খান জেমস স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে করোনাকালীন সহ সকল সময় মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন বলেও জানা যায়। জাকারিয়া খান জেমস যেমন ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ তেমনি সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা সেই সাথে বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান খানের ভাতিজা হওয়াতে বেশ আলোচনায় রয়েছেন তিনি। বিশেষ করে তরুণ সমাজের তার রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,দলের কাছে মনোনয়নপ্রত্যাশী দল আমাকে মনোনয়ন দিলে মেয়র প্রার্থী হতে চাই । দল যাকে দেবে তার পক্ষে আমি কাজ করবো। এছাড়াও তিনি জানান যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সাথে রাজনীতি করে আসছি এবং বর্তমান সরকার তরুণদের সুযোগ দিচ্ছে সেক্ষেত্রে আমি নৌকার আশাবাদী।
অপরদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন , কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির গন-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক তরিকুল ইসলাম লিপন।
গত পৌর নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন বিএনপির এই নেতা।
বিএনপির এই সম্ভাব্য প্রার্থী জানান, কুমারখালী পৌরসভা বিএনপির ব্যাপক সমর্থন এবং ভোট আছে বলে মনে করেন তিনি। আর এই ভোট কে কাজে লাগিয়ে হারানো সিট আবারো বিএনপির দখলে আনতে চান এই নেতা।
বিএনপির আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মনে করা হচ্ছে উপজেলা যুবদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাতিল মাহমুদকে। তিনি জানান দল নির্বাচনে গেলে এবং মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচন করব।
আমার বিশ্বাস সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এই আসনে বিএনপির বিজয় নিশ্চিত।
এছাড়াও জাসদ ও জামায়াত ইসলাম থেকেও আসতে পারে সম্ভাব্য নতুন প্রার্থী।
এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে সাধারণ ভোটাররা বলছে, কুমারখালী পৌরসভা কে ডিজিটাল পৌরসভাতে রূপান্তরসহ বিপদে-আপদে যে প্রার্থীকে পাশে পাবেন তাকেই ভোট দিবেন।
কুমারখালী উপজেলা নির্বাচন অফিসের সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা শিরিন আক্তার বানু বলেন, আগামী ডিসেম্বরে পর ২য় ধাপে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।এরি মধ্যে তারা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।