নির্ধারিত সময়ের পেরিয়ে গেলেও এখনো সম্পন্ন হয়নি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের নির্মাণকাজ। প্রয়োজনীয় তদারকি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা ও প্রশাসনিক জটিলতায় প্রকল্পের মেয়াদ কয়েক দফা পেছানো হলেও কাজ শেষ না হওয়ার কারণ হিসেবে একে-অপরকে দোষারোপ করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের মার্চে দরপত্র আহ্বান করে আবদুর রাজ্জাক জেবিসিএ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পটির কাজ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রতিষ্ঠানটি সেই বছরের মে মাসেই হল নির্মাণ কাজ শুরু করে। চুক্তি অনুযায়ী কাজ শুরুর ১৮ মাসেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রকল্প বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও ৪৩ মাস পরেও ৫০ শতাংশ কাজ শেষ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের তিন তলার কাজ আংশিক সম্পন্ন হলেও বাকি রয়ে গেছে কয়েকটি দেয়াল নির্মাণ ও পলেস্তারার কাজ। প্রয়োজনীয় শ্রমিকের বিপরীতে হাতেগোনা কয়েকজন শ্রমিকই চলছে পুরো প্রকল্প। শ্রমিকের অভাবে প্রায়ই বন্ধ থাকে এর নির্মাণ কার্যক্রম।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প তদারক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম নির্মাণ কাজ বিলম্বিত হওয়ার জন্য উল্টো প্রশাসনের ওপরই দায় চাপিয়ে বলেন, একাধিকবার নকশা পরিবর্তন, অপরিকল্পিত প্রকল্প ও দরপত্রে উল্লেখিত কাজের চেয়েও বাড়তি কাজ করতে হওয়ায় আমাদের সময় বেশি লাগছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এস এম শহীদুল হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে নকশা পরিবর্তন ও অন্যান্য কারণ দেখিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের ভিত্তিতে ককেক দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়ার পরও সেসময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারার কারণ হিসেবে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রকল্পের চারপাশে সীমানা প্রাচীর ছিল না, যা বাস্তবায়ন হতে সময় লেগেছে। এছাড়াও করোনার কারণেও কাজের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে আগামী জানুয়ারির মধ্যে আমরা এ প্রকল্প প্রশাসনকে বুঝিয়ে দিতে পারবো। সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. আবু তাহের বলেন, শেখ হাসিনা হলের কাজ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বিভিন্ন মেয়াদে সময় বৃদ্ধি করলেও কাজের যথাযথ অগ্রগতি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে আমরা প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানাও করেছি। তবে সর্বোপরি এখন আমাদের লক্ষ্য হলো যেকোনো উপায়ে কাজ বুঝে নেওয়া। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী দুই’তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করছি।
জি/হিমেল