একাধারে সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সংগ্রামী রাজনৈতিক কর্মী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রণেশ দাশগুপ্ত । তিনি (৪ নভেম্বর) ১৯৯৭ সালে মারা যান । বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) বরেণ্য এই ব্যক্তির ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি জন্মগ্রহণ করেন আসামে ১৯১২ সালের ১৫ জানুয়ারি। পিতা অপূর্বরত্ন দাশগুপ্ত ছিলেন খ্যাতনামা খেলোয়াড়। স্বাভাবিকভাবে পারিবারিক পরিমণ্ডল থেকেই দেশ,পরাধীনতা, ব্রিটিশবিরোধী রাজনীতি ইত্যাদির সঙ্গে রণেশ দাশগুপ্তের ঘনিষ্ঠতা হয়।
পরবর্তী জীবনে এই রাজনৈতিক সচেতনতা লালন করেন তিনি।১৯২৯ সালের বাঁকুড়ার কলেজে পড়ার সময় অনুশীলন দলের সঙ্গে তার যোগাযোগ ঘটে ও তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।তাকে বাঁকুড়া কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সেখান থেকে এসে কলকাতার সিটি কলেজে ভর্তি হন । পুলিশের উৎপাতে লেখাপড়া বিঘ্ন হওয়ায় বরিশালে ব্রজমোহন কলেজে ভর্তি হন। থাকতে শুরু করেন কবি জীবনানন্দ দাশের পিতা মাতুল সত্যানন্দ দাশের বাড়িতে । সংসার চালানোর জন্য বাধ্য হয়ে পড়াশোনা ছেড়ে রণেশ দাশগুপ্ত সাংবাদিকতার চাকরি নেন ১৯৩৪ সালে ঢাকায় চলে এসে।তার সাংবাদিকতা ক্যারিয়ার শুরু করেন ‘সোনার বাংলা’ পত্রিকার মাধ্যমে। তিনি তরুণ সাহিত্যিক সোমেন চন্দ, কবি কিরণশঙ্কর সেনগুপ্ত প্রমুখের বন্ধুত্ব লাভ করেন ও নানা রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপৃত হন। গোটা পাকিস্তান আমলে বহুবার কারাবাস করেছেন রণেশ দাশগুপ্ত।
রণেশ দাশগুপ্তকে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় জেলে যেতে হয়েছিল। সেখানে নাট্যকার মুনীর চৌধুরীকে ‘কবর’ নাটক লিখতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তার ‘উপন্যাসের শিল্পরূপ’ নামে একটি বিখ্যাত প্রবন্ধগ্রন্থ রচনার জন্য। ১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর বিপ্লবী কথাশিল্পী সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ্ত, শহীদুল্লাহ কায়সারসহ একঝাঁক তরুণ উদীচী গঠন করেন।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হন রণেশ দাশগুপ্ত। দেশ স্বাধীন হলে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি। ১৯৭৫ সালের ১ নভেম্বর কলকাতায় একটি সভায় যোগ দিতে যান রণেশ দাশগুপ্ত।
জিকে/হিমেল